ইমিউন সিস্টেম বাড়ানোর ১৩টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ও জীবনযাপনে প্রাত্যহিক যেকোন কর্ম দক্ষতা এবং কাজের চাপ অনিয়ম তান্ত্রিক খাদ্যাভাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবন অভ্যাসের ফলে মানব শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে পারে। এই ইউনিয়ন সিস্টেম এমনই একটি প্রক্রিয়া যা শরীরের একটি জটিল প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে।
পেজ সূচিপত্রঃইমিউন সিস্টেম বাড়ানোর ১৩টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
- ইমিউন সিস্টেম কি
- ইমিউন সিস্টেমের গুরুত্ব
- ইমিউন সিস্টেম বাড়ানোর সহজ ও কার্যকরী পন্থা
- ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণ সমূহ
- ইমিউন সিস্টেম বাড়ানো নিয়ে আমাদের শেষ কথা
ইমিউন সিস্টেম কি
মানব শরীরে ইউনিয়ন সিস্টেম এমন একটি ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা মানব শরীরে আক্রান্ত যেকোনো জীবাণু ভাইরাস এবং অন্যান্য সংক্রামক ক্ষতিকর পদার্থের আক্রমণ থেকে শরীরকে খুব সংগঠিত করে রক্ষা করে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তির মতে ইমিউনিস্ট সিস্টেম মূলত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
একটি হলো ইনেট বা জন্মগত ইমনি সিস্টেম অপরদিকে এডাপটিভ বা অর্জিত ইমিউনি সিস্টেম। এই সিস্টেম দ্বারা মানব শরীরের প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যা দ্বারা দ্রুত পথিক্রিয়া জানাই এবং আক্রমণাত্মক জীবাণু প্রদীপ থেকে বিতাড়িত করতে সাহায্য করে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তির মতে এডাপটিভ বা অর্জিত ইমিউনিটি যেকোনো মানব শরীরে জীবাণুর আক্রমণ হলে তা দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
মানব শরীরে ইমিউনিটি সিস্টেম বিভিন্ন অংশে রক্তের শ্বেত কণিকা এন্টিবডি লিফট নোড প্লীহা সম্মিলিত সমন্বয়ের মাধ্যমে একযোগে কাজ করে মানব শরীরকে সুস্থ রাখে। এর মাধ্যমে শরীরের যে কোন ধরনের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে
ইমিউন সিস্টেমের গুরুত্ব
মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেমের গুরুত্বের দিকে বিবেচনা করলে দেখা যায় এ সিস্টেমের কারণে এটি শরীরে প্রবেশ করা বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ফাঙ্গাস এই জাতীয় অন্যান্য জীবাণু সহ তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে যেকোনো ধরনের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে চলে। ইমিউন সিস্টেম শরীরের একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মাত্র।
যা মানব শরীরের সমস্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করে। যে ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেম যত বেশি শক্তিশালী তার শরীরের দ্রুত সংক্রমনের সঙ্গে লড়াই করে মানব শরীরকে সুস্থ এবং কাঠামো ভিত্তিক ব্যবস্থার উপর দাঁড় করিয়ে রাখে। অপরদিকে কোন ব্যক্তির রক্তে লোহিত কণিকা বা শ্বেত কণিকার অবস্থান দুর্বল হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির ইমিউনো সিস্টেমও দুর্বল।
এই দুর্বলতার কারণে মানব শরীরে যে কোন রোগের সংক্রমণ অতি দ্রুত হতে পারে। এখানে লক্ষ্যনয় বিষয় হচ্ছে ইমিনিউ সিস্টেম যদি কম থাকে সেই ক্ষেত্রে রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
ইমিউন সিস্টেম বাড়ানোর সহজ ও কার্যকরী পন্থা
মানব শরীরে যার যত ইমিউন সিস্টেম প্রবল শক্তিশালী তার শরীর ও মন মানসিকতা ততই উন্নত হতে থাকে। ইমিউন সিস্টেমকে আরো অধিকতর শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে আমাদের পার্তাহিক জীবনে সুষম খাদ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাস্থ্যকর খাবার যা হেলদি ফুড হিসেবে চিহ্নিত সেগুলি নিয়ম মাফিক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
এটি করলে প্রয়োজনীয় ভিটামিন খনিজ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে অধিকতর শক্তিশালী করে গড়ে তোলে। বিশেষ কিছু খাবার শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বাড়াতে সহায়তা করে। যেমন:
১. ফলমূল ও শাকসবজি
কথায় বলে সুস্থ যদি থাকতে চাও ফলমূল ও শাক সবজির আহার বাড়াও। মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় থাকা একান্ত আবশ্যক। সুষম খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
দেশীয় ফলমূলের মধ্যে আমরা লেবু বাতাবি লেবু জলপাই ব্রুকলি গাজর পেঁপে কাঁচা মরিচ ইত্যাদি ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ সমৃদ্ধ থাকে। অপরদিকে বিদেশি ফলের মধ্যে কমলালেবুতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ থাকায় এ জাতীয় খাবার শরীরকে সুঠাম করতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও কয়টি পোস্টঃ
২. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের শরীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। মাছ মাংস ডিম মুরগির মাংস বাদাম এবং দুধের মত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য শরীরে অকার্য করি কোষগুলোকে কার্যকরী হিসেবে গড়ে তোলে। প্রাত্যাহিক জীবনে আমরা যদি মাছ মাংস ডিম দুধ আদর্শ খাবার হিসেবে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করতে পারি।
তাহলে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এইজন্য ডিম দুধ মুরগির মাংস বাদাম এই জাতীয় খাবারের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। তবেই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। যা থেকে মানুষ সুস্থ জীবন যাপনে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারবে।
৩. ওমেগা ৩ ফেটি অ্যাসিড
আমরা সচরাচর দেখে থাকি মাছের তেল চিয়া সীড ইসবগুলের ভুষি কালিজিরা ফ্লাক্স সিড এগুলোর মধ্যে ওমেগা ৩ শরীরের যে ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান সেগুলো থেকে শরীরের যে জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে এই খাবারগুলি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। অপরদিকে এই জাতীয় খাবার গুলো থেকে মানব শরীরের ইউনিয়ন সিস্টেমকে প্রচন্ড শক্তিশালী করে গড়ে তোলে।
নিয়মিত খাদ্যাভাসের কারণে মানুষ তেমন কোনো জটিল ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস বা সংক্রমণ যেকোনো রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম
ইমিউনি সিস্টেমকে কার্যকরী এবং গতিশীল করার জন্য মানব জীবনে ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। সারাদিনের কর্মব্যস্ততার শেষে একজন ব্যক্তি যখন ঘুমাই তখন তার শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম গুলোকে সঠিকভাবে পুনরুদ্ধার করে এবং তার শরীরের মিনিটে শক্তিকে আরো সুদৃঢ় মজবুত কাঠামোর উপর দাঁড় করায়। পর্যন্ত ঘুমের অভাবে মানব শরীরে কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে যায়।
৫. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম
বর্তমানে আমাদের দেশে শারীরিক কর্মক্ষমতা দিনের পর দিন কমে আসছে। অপরদিকে মানসিক কার্যদাতা তার দৈনন্দিন কার্য সম্পাদন করে আসছে। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিনিয়ত সকল কার্য সম্পাদনের পরেও তার শারীরিক ব্যায়াম তার শরীরকে সতেজ এবং সাবলীল করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভীষণ কার্যকরী শারীরিক ব্যায়াম ইমিউনিটি সিস্টেমের কার্যকারিতা কে সম্প্রসারিত করে।
এবং এটি শরীরের কোষগুলোতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রক্ত চলাচল সম্প্রসারিত এবং তার ইমিউনিটি সেল যেখানে রক্তের প্রয়োজন সেখানে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়।। ফলে শরীর দ্রুততম সংক্রমনের রোগ গুলিকে প্রতিহত করার শক্তি অর্জন করি।
সাধারণত পূর্ণবয়স্ক একজন ব্যক্তি প্রতিদিন নিয়মিত এবং বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে 30 মিনিট যাবত ব্যায়াম করলে তার ইমিউনিটি সিস্টেম মজবুত হয়ে থাকে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে ইমিউনিটি শক্তিশালী রূপ লাভ করে এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
৬. পর্যাপ্ত পানি পান
একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং তার ইমিউনিটি সিস্টেমকে আরো বলিষ্ঠ আকারে শক্তি গঠন করতে সহায়তা করে। একজন মানুষের শরীরের সত্য শতাংশ পানি দ্বারা গঠন করা হয়ে থাকে। পানি শরীরের কোষগুলোকে কার্যকর ভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং শরীরের পেশী গঠনে ভূমিকা রাখে।
শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ পেশাবের মাধ্যমে দূর করতে সম্ভব হয়ে ওঠে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না পেলে শরীরের কার্যক্রমের বিভিন্ন ঘটে এবং ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়। সেই জন্য একজন মানুষকে সারাদিনে অন্ততপক্ষে 8৮থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা একান্ত আবশ্যক।
৭. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
আমরা সাধারণত মানসিক চাপ এবং মানসিক কার্যক্ষমতার উপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করে থাকি। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ মানুষের শারীরিক ইমিউনিটি পাওয়ার কে দুর্বল করে দিতে পারে। আমাদের কার্যক্ষমতার অতিরিক্ত যখন চাপ মাথায় থাকে তখন মস্তিষ্ক আর স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনা। তখন শরীরে কোর্টিসল নামক একপ্রকার হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়।
যা ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা কে দুর্বল থেকে দুর্বল তর করে ফেলে। আমাদের সারাদিনের কাজকর্মের ক্লান্তিকে দূর করার জন্য যোগব্যায়াম ধ্যান এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা উচিত। এই ধ্যান এবং যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মন প্রশান্ত করে গড়ে তুলবে।
এবং এটি হিউম্যান সিস্টেম আরো কার্যকর ভাবে প্রসারিত হবে যা আগামী দিনের জন্য আপনার শরীরকে সহজ থেকে সহজতর করে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এইজন্য ইমিউনিটি সিস্টেমকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ব্যায়াম করে আপনার শরীরকে সতেজ করে কাজে লাগাতে হবে।
৮. ভিটামিন এ ও মিনারেলের সঠিক মাত্রা
মানব শরীরে ইমিউনিটি সিস্টেম সঠিক ও কার্যকারিতার জন্য বিভিন্ন মিনারেল এবং ভিটামিন জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেল মানব শরীরের ইউনিয়ন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. ভিটামিন সি
ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট যা মানব হিউম্যান সিস্টেমকে অধিকতর শক্তিশালী করে গড়ে তুলে এবং সংক্রমণ রোগ সহ যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি আমাদের দেশে আমরা জলপাই লেবু কমলালেবু টমেটো এবং গ্রুপ লিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
এছাড়া আমলকি ভিটামিন সি গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মানব শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
১০. ভিটামিন ডি
মাদক শরীরে ভিটামিন ডি এর যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রাকিতিক অবস্থায় সূর্যালোক থেকে আমরা ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি এছাড়া গরুর দুধ ডিমের কুসুম তেল যুক্ত মাছ এই জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যার শরীরে ভিটামিন ডি এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তার শরীর ইমিউনিটি পাওয়ার শক্তিশালী গঠনে ভিটামিন ডি এর যথেষ্ট অবদান রহিয়াছে।
১১. জিংক
জিংক আমাদের শরীর গঠনে এবং পরিপূর্ণ বয়সে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে থাকে। জ্বীনদের উৎস হিসেবে চিংড়ি মাছ মাংস যেকোনো ধরনের মাছ ও বাদাম জাতীয় খাবার এবং বীজ জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। বিজ জাতীয় খাবারের মধ্যে তালমাখনা ইসবগুলের ভুসি জিয়া বীজ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে জিনকের উৎস আমরা দেখতে পাই।
একজন পরিপূর্ণ বয়সের মানুষ এই খনিজ জাতীয় উপাদান জিংক তার শরীরের ইনিও সেলগুলোকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে থাকে অপরদিকে নিষ্ক্রিয় সেল গুলিকে সক্রিয় করতেও এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
১২. ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ধূমপান একটি অতিরিক্ত ক্ষতিকারক হিসাবে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত। ধূমপানের কারণে মানব ফুসফুস অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যায় অতিরিক্ত মদ পান শরীরের হিউম্যান সিস্টেমকে দুর্বল করে তোলে। প্রত্যহ মত পান শরীরে টক্সিন সৃষ্টি করে এবং মানব শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল থেকে দুর্বল করে তোলে।
এই কারণে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ তার শরীরে বাসা বাঁধে। এই সমস্ত বদ অভ্যাস গুলি পরিত্যাগ করা একান্ত বাঞ্ছনীয়। তাই ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে গঠন করার জন্য এ সমস্ত বদ অভ্যাস গুলি পরিত্যাগ করা আবশ্যক।
১৩. প্রোবায়োটিক এবং প্রাকৃতিক উপাদান
আমাদের শরীরে প্রোবায়োটিক হল এমন একটি ব্যাকটেরিয়া যা স্বাস্থ্যকর উপাদানের কার্যকারিতাকে সংগঠিত করে থাকে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে মানব এনজাইম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলে। বিশেষত টক দই কাভি এবং অন্যান্য ফার্মেন্টেড খাবারে প্রচুর পরিমাণে পুরোবায়োটিক বিদ্যমান থাকায় তা থেকে মানব শরীরে সেলগুলোকে বৃদ্ধি করতে থাকে।
এই সেল গুলি রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে। এছাড়া আমাদের মসলা জাতীয় খাবার যেমন আদা রসুন হলুদের মত প্রাকৃতিক উপাদান এই জাতীয় খাদ্যে মানব শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে অধিকতর সেল দ্বারা পরিপূর্ণ করে শরীরের কাঠামোকে শক্তিশালী করে।
ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণ সমূহ
ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের নিয়মমাফিক ভাবে জীবন যাপন না করলে ইমিউন সিস্টেম এর ক্ষতি হতে পারে। এতে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। আর শরীরে বিভিন্ন অসুখের বাসা বাঁধবে। চলুন জেনে নেই কি কি কারণে ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে,
১. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস আমাদের ইউনিয়ন সিস্টেমকে আরো দুর্বল করে দেয় ।সাধারণত যেকোনো জাতীয় ফাস্টফুড চিনি প্রসেসিং করা খাবার ফ্রোজেন খাবার বেশি খেলে ইমিউন সিস্টেম অধিকতর দুর্বল থেকে দুর্বল হতে পারে। তাই এই জাতীয় প্রসেসিং খাবার থেকে নিজেদেরকে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনা আবশ্যক।
২. মানসিক চাপ
মানসিক চাপের কারণে জন্য মানুষের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। সাধারণত হাসিখুশি খেলাধুলা একটু বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সঙ্গ দেওয়া এই জাতীয় কাজে ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলা যায়। পরিবারের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।
৩. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
আমরা সাধারনত শহর বা শহরতলী এলাকায় রাত্রি জেগে বিভিন্ন কাজকর্ম করে থাকি। এটা শরীরের জন্য খুবই খারাপ একটি বদভ্যাসও বটে। ঘুমের অভাবে সাধারণত মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে তোলে হলে শরীর বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস থাকা ভালো। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় Early to bed and early to rise makes a man healthy wealthy and wise.
৪. ধূমপান ও মদ্যপান
ধূমপান একটি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যস যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে ধ্বংস করে দেয় । এই ইমিউন সিস্টেমের ধ্বংসের কারণে যেকোনো সংক্রামক রোগ ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস যেকোনো ধরনের রোগের বেসিলায় দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এ সমস্ত বদ অভ্যাস গুলো সাধারণত মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে পর্যায়ক্রমে দুর্বল করে দেয়।
ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনসংকটপন্ন হয়ে দাঁড়ায়। যার পর নাই ধূমপান এবং মধ্যপান থেকে সবাইকে মুক্ত থাকা একটি আবশ্যক অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
ইমিউন সিস্টেম বাড়ানো নিয়ে আমাদের শেষ কথা
স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল এই প্রতিপাদ্য বিষয়ে প্রতিটি মানব শরীরে ইমিউন সিস্টেম কে শক্তিশালী করা আবশ্যক। ইমিউন সিস্টেম হল এমন একটি শারীরিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা একজন মানব শরীরকে সব সময়ের জন্য সুরক্ষা প্রদান করে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা সুষম খাদ্যের অভ্যাস। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
পরিবারকে হাস্যজ্জল সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবনযাপন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসগুলো মেনে চললে আমরা সহজেই ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। একদিকে যেমন শারীরিক স্বাস্থ্য বিন্যাস রোগ মুক্তি এবং সুস্থ থাকার যে প্রক্রিয়া, সে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যকে রক্ষা করা সম্ভব।
তাই আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে বদ অভ্যাস পরিত্যাগ করে একটি সুস্থ সুশৃংখল পরিবার ভিত্তিক সমাজ গঠনে এগিয়ে আসা আবশ্যক বলে মনে করি। এতে করে আপনি এবং আপনার পরিবার এবং সমাজ ব্যবস্থা তথা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সুশৃংখলার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং রাষ্ট্রীয় সকল কাঠামো এবং নিয়ম-নিষ্ঠা দ্বারা একটি সুন্দর দেশ ও জাতি গঠনে অবদান রাখবে। এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসা আবশ্যক।
পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url