ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জন্য সেরা ডায়েট চার্ট - সহজেই ওজন কমান

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে আমাদের দেশের খাদ্যাভাসে কারণের জন্য অল্প বয়সেই ছেলেমেয়েরা স্থুল আকৃতি হয়ে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্ত কারণে অল্প বয়সেই রোগ বালাই শরীরের বাসা বাঁধছে।
ইন্টারমিটেন্ট-ফাস্টিং-এর-জন্য-সেরা-ডায়েট-চার্ট-সহজেই-ওজন-কমানপর্যাপ্ত কোন খেলাধুলার মাঠ না থাকা বা বাচ্চাদের নিয়মিত শরীরচর্চর দিকে আমাদের অভিভাবকগনে উদাসীনতার কারণে অল্প বয়সেই ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

পেজ সূচিপত্রঃ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জন্য সেরা ডায়েট চার্ট - সহজেই ওজন কমান

  1. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কি এবং কেন এটি এত জনপ্রিয় 
  2. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর উপকারিতা 
  3. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জন্য আদর্শ ডায়েট চার্ট 
  4. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সময় কি খাবেন এবং কি খাবেন না 
  5. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার জন্য টিপস
  6. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সাধারণ ভুল গুলো 
  7. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা 
  8. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সাথে ফিটনেস ও এক্সারসাইজের সম্পর্ক 
  9. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সম্পর্কিত FAQs
  10. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং নিয়ে আমাদের শেষ কথা

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কি এবং কেন এটি এত জনপ্রিয় 

আমাদের ব্যস্ততম জীবনে আমাদের শরীরের গঠন এবং আকৃতি ওজন কমানোর একটি চ্যালেঞ্জ রেজাল্ট হয়ে দাড়িয়েছে। এই জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ইন্টারমিটেন্ট একটি যথোপযুক্ত কার্যকরী ডায়েট পদ্ধতি হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই ইন্টারমিটেন্ট শুধুমাত্র ওজন কমানো নয় বরং আমাদের শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি এবং মেন্টাল উন্নতিতে কার্যকরী সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে।
যুগোপযোগী এই আর্টিকেলে আমরা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সুবিধা এবং এর ডায়েট চার্ট এবং কিভাবে এটি শুরু করবেন তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি। ইন্টারমটেন্ট ফাস্টিং এমন একটি খাদ্যাভাস যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাবার খাওয়া এবং বাকি সময় খাবার বন্ধ রেখে অভ্যাসটি তৈরি করা হয়।
এটি এমন একটি ডায়েটিং পদ্ধতি যেখানে ডায়েটের পরিবর্তে একটি টাইমিং পদ্ধতি তৈরি করে। যা মানুষকে খাওয়ার সময় এবং খাবার পরিমাণ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের শরীরে ওজন কমানো সহজ হয়ে ওঠে। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং জনপ্রিয়তা হওয়ার প্রধান কারণ।
এ পদ্ধতিতে এমন একটি দীর্ঘমেয়াদি সঠিক পদ্ধতি যা নিয়মিত সঠিক ব্যায়ম করলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। মেটাবলিজম বাড়াই এবং হরমোন ব্যালেন্স রক্ষা করে। এটি একটি সহজ ও কঠিন নিয়ম বিধির চাইতে বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর ধরনসমূহ 

ডায়েটের ক্ষেত্রে ইন্টারমিটেন্ট এ সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম রহিয়াছে। প্রতিটি পদ্ধতির ফাস্টিং এবং এর সময়কাল, খাবারের সময়ের পার্থক্য নির্ণয়, সবকিছুই নিয়ম নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়ে থাকে।এই  ব্যাপারে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জনপ্রিয় কিন্তু ধারা উল্লেখ করা হলো।
  1. ১৬/৮ পদ্ধতিঃ আমাদের দেশে সাধারণত এটি সবচাইতে যুগোপযোগী ও জনপ্রিয় পদ্ধতি যেখানে হল ঘন্টা ফাস্টিং এবং ৮ ঘণ্টার মধ্যে খাবার খাওয়া হয়ে থাকে। অনেকে আছেন যারা রাতের খাবার শেষ করার পর থেকে পরের দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত ফাস্টিং করে।
  2. অপরদিকে উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আপনি যদি রাত ৮ টায় রাতের খাবার শেষ করেন তাহলে পরের দিন দুপুর ১২ টার আগে ঠিক খাবেন না। এই পদ্ধতিটা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি যেখানে দিনের বড় একটি সময় ঘুমিয়ে কাটানো হয়, সেই ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা খুবই সহজ এবং অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে দেখা দিয়েছে।
  3. ৫:২ পদ্ধতিঃ  এটি একটি বিকল্প পদ্ধতি যে পদ্ধতির মাধ্যমে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আপনি স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করবেন এবং এই পদ্ধতির মাধ্যমে দুই দিন ৫০০ থেকে ৬০০ ক্যালোরি গ্রহণ করবেন। এ পদ্ধতি গুলোর মধ্যে সাধারণত দেখে থাকি দিনব্যাপী ফাস্টিং না করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণের মাধ্যমে আপনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং গ্রহণ করা সম্ভব হবে। যা এ পদ্ধতি ব্যবহারে অনেকের জন্য সহজ হতে পারে। 
  4. OMAD(One Meal a Day) পদ্ধতিঃ এমন একটি পদ্ধতি যে পদ্ধতির মাধ্যমে দিনের শুধুমাত্র একটু বড় খাবার খাওয়া হয়, আর সমস্ত দিন ব্যাপী বাকি সময় ফাস্টিং করা হয়। সবচাইতে কঠিন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে এটি একটি অত্যন্ত জটিল পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত।
  5. যারা একবারই বড় খাবার খেয়ে সারা দিন কোন কিছু না খেয়ে থাকতে অভ্যস্ত তাদের জন্য এ পদ্ধতি কার্যকরি হিসেবে দেখা দিয়ে থাকে। সারাদিন অভুক্ত থেকে এই পদ্ধতি ইন্টারনেট ফাস্টিং হিসেবে ডায়েটিং ও সুবিধা হতে পারে।
আপনার আরও যে যে পোষ্ট পছন্দ হতে পারেঃ

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর উপকারিতা

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর মাধ্যমে ওজন খুব সহজেই কমানো সম্ভব। এবং এটি আমাদের দেহের মেটাবলিজমের বৃদ্ধি ঘটানোর মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি অনেকে মনে করে থাকে ওজন কমানোর জন্য শরীরের ক্ষতি হয়ে থাকে। কিন্তু এই তথ্যটি ভুল। চলুন আজ আপনাকে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর উপকারিতা সম্পর্কে পুরোপুরি একটি ধারণা দেই।
  1. ওজন কমানোর জন্য কার্যকরঃ ইন্টারনেটে ফাস্টিং একজন ব্যক্তির শরীরে ওজন কমানোর জন্য কার্যকরীভাবে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট যাতে বান করতে পারে তবে তা উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত। শরীরের যে ক্যালরি কমিয়ে স্তর থেকে শক্তি সংগ্রহ করে সে ওজন কমাতে সাহায্য করে। খাদ্য বহন না করাই শরীর তার সমৃদ্ধ কে বার্ন করে তার শক্তি যোগান দিয়ে থাকেন এভাবে নিয়ে ফাস্টিং তার উপকারে আসে। 
  2. মেটাবলিজমের উন্নতিঃ যথাযথ ফাস্টিং এর সময় শরীরে একটা মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ক্যালোরিও বাড়ানোর পথ অত্যাধিক বেড়ে যায়। এ পদ্ধতির কারণে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় যা রক্তে গ্লকোজের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  3. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করেঃ বিভিন্ন গবেষণা দেখা গেছে যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরের জমানো এলডিএল কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ সমস্ত কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়। যা একজন মানুষকে যে কোন হৃদ রোগে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। 
  4. ব্রেন হেল্প ও মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি করেঃ মেটাবলিজম ফাস্টিং এর সময় ব্রেন ডেরাইভড নিউরো ট্রাফিক ফ্যাক্টর (BDNF) অনেকাংশে বেড়ে যাই। যার কারণে মানব শরীরে তার মস্তিষ্কে স্মৃতিশক্তি বেড়ে গিয়ে থাকে। এই  ফলশ্রুতিতে তোর মনোযোগ ও সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিপ্রেশন এবং মানসিক চাপ ও কমাতে সাহায্য করে।
  5. ইনফ্লেমেশন কমানোঃ সাধারণত ফাস্টিং শরীরের  দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। যা দীর্ঘ মিয়াদে ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য দীর্ঘ স্থায়ী রোগ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জন্য আদর্শ ডায়েট চার্ট

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সময় আপনি কি খাবেন আর কি খাবেন না তা জানা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আমরা আমাদের তথ্যগুলো নিয়ে আলোচনা করব। এখানে একটি আদর্শ ১৬/৮ ফাস্টিং ডায়েট প্ল্যান দেওয়া হল যা আপনি অনুসরণ করতে পারেন।
ইন্টারমিটেন্ট-ফাস্টিং-এর-জন্য-সেরা-ডায়েট-চার্ট-সহজেই-ওজন-কমান
ডায়েট চার্ট (১৬/৮ পদ্ধতির ভিত্তিতে) ঃ
সকাল (সকাল ৮টা) ব্রেকফাস্ট ( সকাল ১১ টা) মধ্যাহ্নভোজ (বিকাল ৩টা) সন্ধ্যাকালীন স্নাক্স (বিকাল ৫টা) রাতের খাবার (সন্ধ্যা ৭টা) রাত (রাত ৮টা)
কাগজি লেবুর সঙ্গে গরম পানি খাবা গ্রিন টি (ক্যালোরি ছাড়া পানীয়) ওট মিল, সিজিনাল যেকোনো ফল, যেমন আপেল বা বেরি, বাদাম ও দই। গ্রিলড চিকেন , চিকেন সুপ বা মাছ সেই সঙ্গে ভেজিটেবল। সন্ধ্যাকালীন ম্যাক্স এর মধ্যে হ্যান্ড ফুল বাদাম, সানফ্লাওয়ার চিটস অথবা যেকোনো একটি ফল আপনার জন্য সেব্বু। রাতের খাবারের জন্য আপনার সবজি সুপ, মিক্সড ভেজিটেবল, এবং সেই সঙ্গে কিছু প্রোটিন (গ্রিনফিস বা গ্রিল চিকেন অথবা চিকেন সুপ) ফাস্টিং এর জন্য আপনি খেতে পারেন শুধু পানি, গ্রিন টি, অথবা ব্ল্যাক কফি
খাবারের সময় কি খাবেনঃ

  • প্রোটিনঃ গ্রিলড চিকেন, চিকেন সুপ, গ্রিলড ফিস, মাছ, ডিম, ডাল, টোফু ইত্যাদি।
  • কার্বোহাইড্রেটঃ কার্বোহাইড্রেটহিসেবে আমরা ওটমিল, কয়িনোয়া, ব্রাউন রাইস, মিষ্টি আলু আমরা সাধারণত ব্যবহার করে থাকি।
  • ফ্যাটঃ ফ্যাট ব্যবহার হিসেবে আমরা অলিভ অয়েল, বাদাম, অ্যাভোকাডো ব্যবহার করে থাকি। 
  • ফাইবারঃ ফাইবার সাধারণত মানব শরীরের খাদ্য উপযোগী হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ফাইবার  জাতীয় খাদ্য এডভাইস প্রদান করেন। ফাইবার  খাদ্যের মধ্যে শাকসবজি, সিম, স্পিনার, গাজর, ও ব্রুকলি এর ব্যবহার সচরাচর লক্ষণীয়। 
ফাস্টিং এর সময় কি খাবেন নাঃ
  1. চিনি যুক্ত পানীয় খাবার 
  2. অতিরিক্ত তেল যুক্ত অথবা প্রসেসড খাবার খাবেন না 
  3. কোন জাতীয় অ্যালকোহল খাবেন না 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সময় কি খাবেন এবং কি খাবেন না 

সাধারণত ফাস্টিং এর সময়ে শরীরের জন্য হাইড্রেশন রাখা অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফাস্টিং চলাকালীন পানির মধ্যে জল, গ্রিন টি জাতীয় পানীয়, লেবু মিশ্রিত পানি, অথবা ব্ল্যাক কফি নেওয়া যায়। খেয়াল রাখতে হবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত বা ক্যালোরি সমৃদ্ধ পানীয় আপনাকে একদম এড়িয়ে চলা উচিত। 
সচারচর ফাস্টিং চলাকালে আপনার স্বাস্থ্যকর খাবার আপনাকে বেছে নেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রোটিন যুক্ত খাবার, ফাইবার জাতীয় খাবার, হেলদি ফ্যাট ও কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার শরীরকে যথাযথ পুষ্টি যোগাতে সহায়কের ভূমিকা পালন করে থাকে।
ধরুন বলে যাই বাদাম, বিভিন্ন ধরনের ফল, বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, যা হেল্থ প্রেইন সময়ে সবচেয়ে উপকারী হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত তেল বা চর্বি জাতীয় জিনিস, চিনি বা চিনি সমৃদ্ধ খাবার ফাস্টিং এর প্রভাব নষ্ট করতে পারে। 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার টিপস 

  1. ধীরে ধীরে শুরু করুনঃ আপনার নিজ শরীরকে আপনার আয়ত্তে মানিয়ে নিতে প্রথমে ১২/১২ পদ্ধতি দিয়ে ধীরে ধীরে শুরু করতে পারেন। এরপরে আপনার শরীরের অবস্থার উপর বিবেচনা করে ১৬/৮ পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।
  2. হাইড্রেশন বজায় রাখুনঃ হাইড্রেশন বজায় রাখার জন্য ফাস্টিং এর সময় আপনাকে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ ডিহাইড্রেশন এড়িয়ে চলার জন্য এটি সহায়ক। এখান থেকে ডিহাইড্রেশন এড়িয়ে চলার জন্য আপনাকে কমপক্ষে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে নচেৎ ডিহাইড্রেশনের কবলে পড়ে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। 
  3. সঠিক ঘুম এবং বিশ্রাম নিনঃ মানব শরীরে যথাযথ ঘুম মানুষের সুস্থতার একটি প্রতীক হিসেবে কাজ করে। উপযুক্ত ঘুম শরীরকে ফাস্টিং এ সময় সাপোর্ট করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করুন যাতে শরীরের মেটাবলিজম নিয়মিত ঠিক থাকবে। 
  4. ওয়ার্ক আউট এর সাথে মিলানঃ ফাস্টিং এর সময় অথবা ফাস্টিং চলাকালীন সময়ে হালকা শরীর চর্চা যেমন যোগব্যায়াম, ফ্রী-হান্ড এক্সারসাইজ বা হাটাহাটি করা বেশি কার্যকরী। অতিরিক্ত শক্তিশালী অথবা ভারী ওয়ার্কআউটের চেয়ে হালকা শরীরচর্চা আপনাকে এ ব্যাপারে দীর্ঘস্থায়ী ফল দিতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস।

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সাধারণ ভুলগুলো 

  1. অতিরিক্ত ফাস্টিংঃ সচরাচর আমরা দেখে থাকি অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকেন। দীর্ঘ সময়ই না খেয়ে থাকা শরীরের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর হতে পারে। একটানা দীর্ঘ ফাস্টিং না করে নির্দিষ্ট সময় ধরে ফাস্টিং করার চেষ্টা করুন। একটি সময়ে আপনি নিয়মতান্ত্রিকভাবে অভ্যাসে পরিণত হবেন। 
  2. পানি পান না করাঃ ফাস্টিং এর সময় অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। এটি একটি খারাপ অভ্যাস। ফাস্টিং এর সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে যা মানব শরীরে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই  রাতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। 
  3. ফাস্টিং এর পর অতিরিক্ত খাওয়াঃ অনেককে দেখে থাকি নিয়মিত অনেকেই ফাস্টিং শেষ করার পর অতিরিক্ত খাবার প্রবণতা দেখা যায়। অতিরিক্ত খাবার প্রবণতার কারণে এটি ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে নষ্ট করতে পারে। এদিকে আপনাকে আপনার ব্যাপারে কাস্টিং এর ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো অনুধাবন করতে হবে। 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা 

আমরা বিভিন্ন মেডিকেল সায়েন্সে ফাস্টিং সম্পর্কে বিশেষ তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করে থাকি। যদিও ইন্টারমিডিয়েন্ট ফাস্টিং সাধারণত খুবই নিরাপদ তবে কিছু কিছু মানুষের জন্য কি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষত যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, প্রেগন্যান্ট মাদার, অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের এই ডায়েট শুরু করার আগে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। এছাড়া যারা খাদ্য পেটুক হিসেবে বিবেচিত, খাওয়া-দাওয়ার ব্যাধি রয়েছে তাদের জন্য ফাস্টিং ক্ষতিকারক হতে পারে। 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর সাথে ফিটনেস ও এক্সারসাইজের সম্পর্ক 

আমরা ফাস্টিং সম্পর্কে বিশদভাবে উপস্থাপন করেছি। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ও যোগ ব্যায়াম এর মত অনুশীলন, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, বা হাঁটাহাঁটি ফ্যাট বানকে ত্বরান্বিত করে থাকে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে ভারী ওয়ার্কআউট এড়িয়ে চলা আবশ্যক। কারণ দীর্ঘ সময় না খেয়ে শরীর দুর্বল হতে পারে। এতে করে আপনার রক্তের গ্লকোজ কমে গিয়ে আপনি যেকোনো সময় মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারেন।
ইন্টারমিটেন্ট-ফাস্টিং-এর-জন্য-সেরা-ডায়েট-চার্ট-সহজেই-ওজন-কমান
এই ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে ফাস্টিং এর বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। যাতে করে আপনি  অসুস্থ না হয়ে পড়তে পারেন।

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সম্পর্কিত FAQs

প্রশ্নঃ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কতদিন করতে হবে?
উত্তরঃ মনে রাখতে হবে যে, এটি আপনার শরীরের সাথে সম্পর্কিত যা মানিয়ে নেওয়ার উপর নির্ভর করে। তবে নিয়মিত ফাস্টিং দীর্ঘ মেয়াদকালে এটি আপনার উপকারে আসতে পারে। 

প্রশ্নঃ ফাস্টিং চলাকালীন পানি পান করা যাবে?
উত্তরঃ ফাস্টিং চলাকালীন সময়ে আপনি কি নিয়মিত পানি পান করা যাবে। তবে গ্রিন টি বা ব্লাক কফি ফাস্টিং চলাকালীন সময়ে আপনি অনায়াসে পান করতে পারেন। 

প্রশ্নঃ ফাস্টিং এর সময় ফল খাওয়া যাবে?
উত্তরঃ আপনি জেনে থাকবেন যে ফাস্টিং এর সময় বা ফাস্টিং চলাকালীন সময়ে খাবার না খাওয়াই যুক্তিযুক্ত, কারণ খাবার সময়ে ফল অন্তর্ভুক্ত করতে অনেক আয়োজনের বিষয় আছে। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে খাবারের সময় ফল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং নিয়ে আমাদের শেষ কথা

আমরা অনেকেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর বিষয়ে অনেক তথ্য এবং উপাত্ত সংগ্রহ করে এর উপকারী এবং অপকারী দিকগুলো বিশ্লেষণ করে জানার চেষ্টা করেছি। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুধুমাত্র ওজন কমানোর জন্য এটি কার্যকরী নহে বরং এটি একটি স্বাস্থ্যগত প্রক্রিয়া যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত।
তবে এই ফাস্টিং শুরু করার আগে নিজের শরীর এবং স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী একটি সঠিক পরিকল্পনা আপনাকে তৈরি করতে হবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আপনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর মাধ্যমে ওজন কমাতে গেলে ধৈর্জ ধরে তা দীর্ঘমিয়াদী অনুসরণ করা আবশ্যক। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পর্যাপ্ত হাইড্রোশেন নিশ্চিত করতে হবে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার আগে শরীরের অবস্থার দিকে বিবেচনা করে আপনি একজন ভালো মানের ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে এই কাজ শুরু করতে পারেন। আশা করি আপনার শরীর স্বাস্থ্য এবং মানসিকতার উত্তরোত্তর উন্নতি সাধিত হবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করি।।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url