কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা - কলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
বর্তমান সভ্য সমাজে সাধারণত বিভিন্ন দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে আমাদের দেশের মানুষজন রূপচর্চা করে থাকে। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে বিভিন্ন দেশীয় অনেক পণ্য উপাদান ও ব্যবহার করে রূপচর্চা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
পেজ সূচিপত্রঃ রূপচর্চা করবেন কলার খোসা দিয়ে করুন
- কলার খোসায় থাকা পুষ্টি উপাদান
- কলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কলার খোসা
- ব্রণ ও দাগ দূরীকরণে কলার খোসার ব্যবহার
- ত্বক মসৃণ করতে কলার খোসা
- চোখের নিচের ফোলা ভাব ও কালো দাগ দূর করতে কলার খোসা
- কলার খোসা দিয়ে স্ক্রাব তৈরি
- চুলের যত্নে কলার খোসার উপকারিতা
- ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে কলার খোসা
- ত্বকের শীতলতা এবং নরমতা বাড়াতে কলার খোসা
- আন্টি এজিং গুনাবলী ও ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে কলার খোসা
- ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে কলার খোসা
- কলার খোসা ব্যবহারের সতর্কতা
- ঘরোয়া উপায়ে কলার খোসার প্যাক তৈরি করার উপায়
- কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা নিয়ে লেখকের বক্তব্য
কলার খোসায় থাকা পুষ্টি উপাদান
কলার খোসায় থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত । এই কলার খোসায় রয়েছে ভিটামিন এ,বি, সি, এবং ই সহ বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা ত্বকের জন্য এবং তার উজ্জ্বলতাকে স্বাস্থ্য উপযোগী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ব্রণ, বিভিন্ন ধরনের মুখের দাগ, এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করার ক্ষেত্রে কলার খোসা অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। কলার খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ই। এই ভিটামিন সি এবং ই এর কারণে ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে। ভিটামিন সি ত্বকের যে কোষগুলো সেগুলোকে পূর্ণ গঠনে সাহায্য করে।
এতে আছে প্রচুর পরিমাণ অক্সি এসিডেন্ট।এছাড়া রয়েছে পটাশিয়াম যা ত্বকের আদ্রতা কে ধরে রাখতে সহায়তা করে। কলার খোসাতে আরো রয়েছে ফাইটোকেমিক্যালস, যা ত্বকের বিভিন্ন ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘমেয়াদী তারুণ্যকে ধরে রাখে।
কলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলার খোসা প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে সাধারণত ত্বক এবং চুলের যত্নে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার হয়ে আসছে। এই কলার খোসা তে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল এবং অক্সি এসিডেন্ট সহ নানা ধরনের উপকারী উপাদান যা নানা ধরনের উপকার করে থাকে। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে । আমরা এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা আনতে দেখব বলার খোসার বিভিন্ন উপকারী তথ্যাবলী এবং কিছু অপকারী দিক নিয়েও আলোকপাত করবো।
কলার খোসার উপকারিতা
১. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ কলার খোসাতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই যা ত্বককে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করে থাকে। এই খোসায় রয়েছে অক্সি এসিডেন্ট যা ত্বকের বিভিন্ন নির্জীব কোষগুলিকে পুনর্জীবিত করে দীপ্তিময় হিসেবে গড়ে তোলে যা উজ্জ্বলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে।
২. ব্রণ ও মুখের দাগ কমাতে সাহায্য করেঃ কলার খোসায় রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা মুখের ব্রণ ও ত্বকের বিভিন্ন দাগ কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের প্রদা হোক আমায় এবং ব্রণের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে মুখের উজ্জ্বলতা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩. বয়সের ছাপ কমায়ঃ আমাদের দেশে সূর্যের আলটি ভায়োলেট রশ্মির কারণে অল্প বয়সেই মানুষের মুখে বয়স্কের ছাপ পড়ে যায়। কলার খোসায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা ও ফাইন লাইন দূর করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত কলার খোসা ব্যবহারে ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকে এবং বয়সের ছাপ কমে যায়।।
৪. ত্বকের ময়েশচারাইজ করেঃ কলার খোসাতে রয়েছে পটাশিয়াম সহ প্রাকৃতিক তেল যা ত্বককে মহেশচারাই রাখতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। এই কলার খোসা এটি ত্বকের শুষ্কতার দূর করে এবং ত্বককে নরম ও কোমল করে তোলে
৫. চুলের যত্নে কার্যকরীঃ কলার খোসা চুলের যত্নে একটি কার্যকরী উপযোগী উপাদান। যাদের চুলের শুষ্কতা এবং খুশী বিদ্যমান থাকে তারা কলার পেস্ট বা মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। এই কলার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা চুলকে মজবুত করে এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
৬. আন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাবলীঃ কলার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ইনিফ্লেমেটরি গুণাগুণ যা ত্বকের লালচে ভাবকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসে এবং মুখের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে থাকে। একটু ছোটখাটো ত্বকের জ্বালা বা ফোলা ভাব কমাতে দ্রুত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
৭. ত্বকের ফোলা ভাব ও কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ আমাদের সমাজে তরুণ সমাজের অনেকের চোখের নিচে ফোলা ভাব ও কালচে দাগ পড়ে যায়। অতি দুশ্চিন্তা অথবা রাত জাগার কারণে এ দাগগুলো মুখের উপরে প্রভাব বিস্তার করে। কলার খোসা একটি অত্যন্ত উপকারী হিসাবে অক্সি এসিডন্ট হিসাবে এ কালো দাগ এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এতে আছে ভিটামিন এবং পটাশিয়াম যা চোখের চারপাশের ত্বককে শীতল ও উজ্জ্বল করে তোলে।
৮. প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়ঃ আমরা দেখে থাকি অনেকের মুখে অনেক কোষগুলি মৃত প্রায়ই হিসেবে লক্ষ্য করা যায়। মৃত কোষগুলির কারণে জন্য অনেক সময় চেহারার মধ্যে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। কলার খোসার সাথে চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে মুখের উপরিভাগে মৃত কোষ গুলোকে লাগিয়ে রেখে মেসেজ করুন। কিছুক্ষণ পর আলতো ভাবে মুখটি ধুয়ে নিন এতে করে তকে নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
কলার খোসার অপকারিতা
১. এলার্জির সমস্যাঃ কিছু কিছু মানুষের জন্য কলার খোসা ত্বকে এলার্জির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এতে ত্বক লালচে ভাব, চুলকানির মতো সমস্যা, মুখ জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। তাই প্রথমবার ব্যবহার করার আগে হাতের ছোট একটি অংশে পরীক্ষা করে নিন।
২. বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতিঃ কখনো কখনো আমরা কলার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং পোকামাকড়ের নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক স্প্রে করে থাকি। এসব খোসা ব্যবহার করলে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি সম্মুখীন হতে। পারে। তাই কলার খোসা পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করার আগে খোশাগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।
৩. ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতাঃ যদি খুব বেশি সময় ধরে আমরা কলার খোসার পেস্ট তোকে লাগিয়ে রাখি তবে এটি ত্বকের আদ্রতা শুষে নিতে পারে। যা ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে পারে। তাই কলার খোসা ব্যবহারের পর ত্বককে ভালোভাবে মশ্চারাইজ করে নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
৪. ফাঙ্গাল সংক্রমণঃ পুরনো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া কলার খোসা এক রকমের ফাঙ্গাস জন্মাতে সাহায্য করে। যা ত্বকের সংক্রমণ ঘটতে পারে। এইজন্য সবসময়ই সতেজ খোসা ব্যবহার করা উচিত এবং ব্যবহারের পর খোসারটি যথাযথভাবে ফেলে দেওয়া উচিত
৫. চুলে তেলতেলে ভাব সৃষ্টিঃ অনেক সময় চুলকে স্বাস্থ্যবান করার জন্য চুলে কলার খোসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তুলে কলার খোসা ব্যবহারের পর যদি চুল ভালোভাবে না ধোয়া হয়, তাহলে চুলে তেল তেলে ভাব বা ময়লা জমতে পারে। তাই চুলে মাছ হিসেবে খোসা ব্যবহারের পর চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে কলার খোসা
আমাদের দেশে প্রতিদিনই ধুলাবালি ও দূষণের ফলে ত্বক তার উজ্জ্বলতা হারিয়ে থাকে। কলার খোসায় এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলো ত্বকের মৃত কোষগুলিকে পুন:র্জীবিত করতে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়কের ভূমিকা পালন করে। এক টুকরো তাজা কলার খোসা নিয়ে ত্বকের উপরে ঘষে নিলে এর ভিটামিন সি ত্বকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করার কাজ করে থাকে।
ব্রণ ও দাগ দূরীকরণে কলার খোসার ব্যবহার
সাধারণত আমাদের দেশে উদীয়মান ছেলেমেয়েদের ব্রণ এবং ত্বকের দাগ আমরা লক্ষ্য করে থাকি। এ দাগ আমাদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। কলার খোসার এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ ব্রনের লালচে ভাব ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। কলার খোসা মুখে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে ঘষে দিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এটি ব্রণ শুকাতে এবং ত্বকের দাগ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষগুলির ক্ষতি কমিয়ে দাগ গুলো দূর করে ত্বককে মসৃণ করে তোলে।
ত্বক মসৃণ করতে কলার খোসা
সাধারণত কলার খোসার ভিতরের অংশে থাকে প্রাকৃতিক তেল এবং ভিটামিন ই যা ত্বকের কোষগুলিকে পুনরুদ্ধারে বিশেষভাবে সহায়তা করে।। যাদের শুষ্ক ত্বক নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক সমাধানও হতে পারে বটে। কলার খোসা ত্বকের উপরে আলতো করে ঘষে নিয়ে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে পারেন। এভাবে আপনার ত্বককে নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে নরম এবং মসৃণ।
চোখের নিচের ফোলা ভাব ও কালো দাগ দূর করতে কলার খোসা
অনেকের চোখের নিচে ফোলা ফোলা ভাব এবং কালো দাগ সচরাচর লক্ষ্য করা যায় গলার খোসা ফোলা ভাব এবং কালো দাগ দূর করতে একটি চমৎকার উপাদান বটে। কলার খোসায় থাকা পটাশিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেল ত্বকের ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে থাকে।। এক টুকরো কলার খোসা চোখের নিচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধীরে ধীরে ঘষে নিন। দেখবেন এই একটি ত্বককে শীতল করে দেয় এবং চোখের ক্লান্তি কমিয়ে দেয়।
কলার খোসা দিয়েই স্ক্রাব তৈরি
সাধারণত প্রাকৃতিক ভাবে স্ক্রাব হিসেবে গলার খোসার ব্যবহার অনেক উপকারী হিসাবে কাজ করে থাকে। স্ক্রাব তৈরি করতে কলার খোসা ছোট ছোট টুকরো করে নিন এতে কিছু পরিমাণ চিনি ও মধু মিশিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও নরম করে তুলবে। নিয়মিত স্ক্রাব করার মাধ্যমে আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকবে এবং ত্বক আরো কোমল ও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে।
চুলের যত্নে কলার খোসার উপকারিতা
আমরা দেখেছি চুলের যত্নে কলার খোসার ব্যবহার একটি বিস্ময়কর উপাদানও বটে। কলার খোসায় থাকা পটাশিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট চুলের শুষ্কতা দূর করে চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। খোসা দিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাথায় মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের রুক্ষতা কমিয়ে চুলকে মসৃণ এবং খুশকি দূর করে চুলকে স্বাস্থ্যকর ও মজবুত করে।
ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে কলার খোসা
শীতকালে সচরাচর আমাদের অনেকেরই ঠোঁট ফেটে যায় এটি একটি শীতকালীন ময়েশ্চারাইজার কারণে ফলে এটি হয়ে থাকে। কলার খোসায় থাকা প্রাকৃতিক তেল ঠোঁটের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন রাতে এক টুকরো কলার খোসা ফোটে আলতো করে ঘষে দিলে ঠোঁটের শুষ্কতা কমে যায় ঠোঁট নরম থাকে এবং কোমল হয়। এর কারণে ঠোঁট ফাটা থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এর জন্য সেরা ডায়েট চার্ট - সহজেই ওজন কমান
ত্বকের শীতলতা এবং নরমতা বাড়াতে কলার খোসা
আমাদের দেশে আলতা ভায়োলেট রশ্মির কারণে রোদে পোড়া ও ত্বক জ্বালাপোড়া সমস্যার জন্য কলার খোসা একটি আদর্শ প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার হয়ে আসছে। কলার খোসার ভিতরের অংশ ত্বকের জ্বালা কমাতে এবং শীতলতা প্রদান করতে যথেষ্ট সাহায্য করে থাকে। কলার খোসার পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে 10 থেকে 20 মিনিট রেখে দিলে তা ত্বকের জালা কমিয়ে আনে এবং ত্বককে নরম ও আদ্র রাখে।
এন্টি এজিং গুণাবলী এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে কলার খোসা
কলার খোসায় থাকা বিভিন্ন ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা ও ফাইন লাইন কমাতে সাহায্য করে থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ গুলোকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে তারুণ্য ধরে রাখতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। নিয়মিত কলার খোসা ব্যবহারে ত্বকের টানটান ভাব বজায় থাকে এতে করে বয়সের ছাপ এবং বলিরেখা কমে যায়।
ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে কলার খোসা
কলার খোসায় থাকা প্রাকৃতিকভাবে তেল এবং পটাশিয়াম ত্বকের আর্দ্রতা কে ধরে রাখতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি একটি আদর্শ সমাধানও বটে। তক মশ্চারাইজ করার জন্য কলার খোসা সরাসরি মুখে বা হাতে ঘষে 10-15 মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রেখে ত্বককে নরম ও মসৃণ করে তোলে।
কলার খোসা ব্যবহারে সতর্কতা
কলার খোসা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি সতর্কতা আপনার মাথায় রাখা প্রয়োজন। এর উপকারী দিক থাকলেও কিছু সতর্কতা না মেনে চললে আমাদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই চলুন জানিয়ে দেই কলার খোসা ব্যবহারে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত,
- কোন ফেলে দেওয়া অথবা দূষিত কোন খোসা ব্যবহার করা একেবারে অনুচিত।
- তাজা কলার খোসা ব্যবহার করলে ত্বকের সংবেদনশীলতা কম থাকে।
- তবে যাদের ত্বক অ্যালার্জি প্রবণ তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে খোসাটি হাতে পরীক্ষা করে নিয়েই এরপর ব্যবহার করা উচিত বলে আমরা মনে করি।
ঘরোয়া উপায়ে কলার খোসার প্যাক তৈরি করার উপায়
ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং ত্বকের সুস্থতা দূর করার জন্য কলার খোসার সাথে কাঁচা হলুদ, মধু বা টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করা যায়। একটি কলার খোসা ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ব্লেন্ড করে এর সাথে ১ চা চামচ মধু এবং দু এক চামচ কাঁচা হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট পর্যন্ত রেখে দিন। এরপরে পরিষ্কার পানি দ্বারা আপনার মুখমণ্ডল ভৌত করে ফেলুন এর কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে এবং ত্বককে দাগ মুক্ত করবে।
আরও পড়ুনঃ নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন - নিম গাছের উপকারিতা
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা নিয়ে লেখকের বক্তব্য
কলার খোসার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ এবং এর বিভিন্ন কার্যকারী ব্যবহার রূপচর্চার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে আসছে। এটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে সহজেই আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারে। প্রতিদিন রূপচর্চার রুটিনে কলার খোসা যুক্ত করলে ত্বক হবে আরো উজ্জ্বল মসৃণ এবং তারুণ্য দীপ্ত। এছাড়া এটি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ উপাদান হওয়ায় এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নাই বললেই চলে।
কলার খোসা সহজলভ্য হওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এর ব্যবহার এটি সহজ ও সাশ্রয়ী উপায়ও বটে। তাই আমরা জেনে থাকবো আজ থেকে কলার খোসা ফেলে না দিয়ে বিভিন্ন উপকারী রূপচর্চার উপকরণ হিসেবে আমরা সচরাচর এটিকে ব্যবহার করতে পারি। এই সহজলভ্য উপাদান দিয়ে আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সুন্দর সাবলীল ভাবে রূপচর্চায় এবং চুলের পরিচর্যার জন্য সচরাচর ব্যবহার করতে পারি।
পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url