এমপক্স এর ভয়াবহতা বিশ্বজুড়ে! - এমপক্স কি ও লক্ষণগুলো
এমপক্সের ভয়াবহতা এখন বিশ্বজুড়ে চলছে। কভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী মহামারীর আতঙ্ক শেষ হতে না হতেই পুরো পৃথিবীব্যাপী এমপক্সের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়েছে। আজ আমি আপনাদের জানাবো এমপক্স কি ও লক্ষণগুলো কি কি,
পেজ সূচিপত্রঃ এমপক্স এর ভয়াবহতা বিশ্বজুড়ে! - এমপক্স কি ও লক্ষণগুলো
- এমপক্স কি
- এমপক্স লক্ষণ গুলি কি কি
- এমপক্স ভয়াবহতা
- এমপক্স থেকে কিভাবে নিরাপদে থাকবেন
- এমপক্স নিয়ে আমাদের শেষ কথা
এমপক্স কি
আফ্রিকা মহাদেশে সর্বপ্রথম বানরের শরীরে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীগণ আবিষ্কার করেন। কারণ হিসাবে এটিকে মাঙ্কিপক্স হিসাবেও তা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। আফ্রিকা মহাদেশ ১৯৭০ সালে মানবদেহে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে আফ্রিকার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।
তবে বিশেষজ্ঞগণ মত প্রকাশ করেন যে শুধু বানর নয় ইঁদুরের দেহে ও এ ভাইরাসের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীগণ আবিষ্কার করেছেন। প্রাণীর প্রতি যাতে কোন বিদ্বেষ তৈরি না হতে পারে, সেই জন্য এই ভাইরাসকে এম বক্স হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নামকরণ করেছেন।
এমপক্স প্রথম একটি বানরের শরীরে বিজ্ঞানীগণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা এর মাধ্যমে এর ভাইরাসটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। সেখান থেকে মানব শরীরে অনুপ্রবেশ করে। কোন ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে গেলে তার ত্বকের সংস্পর্শে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেও এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে।
এমপক্সের লক্ষণ গুলি কি কি
এমপক্সের লক্ষণ এর দিকে ফিরে তাকালে বোঝা যায় এই রোগটি স্মলপক্সের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে এমপক্সের লক্ষণ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে শরীরে ভীষণ জ্বর, প্রচন্ড মাথা ব্যথা, ঘাড়ে পিঠে ব্যথা এবং শরীরের মাংসপেশিতে ব্যথা ভীষণভাবে অনুভূত হতে দেখা যায়।
অপরদিকে এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরের পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি দেখা দিয়ে থাকে। এর প্রচন্ডতা এত বেশি যে মানব শরীরে, মুখেও ফুসকুড়ি প্রচন্ডভাবে দেখা দিয়ে থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
হাতের তালু ও পায়ের তলায় ও এই ফুসকুড়ি দেখা দিয়ে থাকে। এই সমস্ত ফুসকুড়ি গুলো চুলকানিতে রূপ নেই। আবার ফুসকুড়ি গুলোতে পুঁজ ও বিভিন্ন ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই এমপক্স আবার অনেকটা স্মলপক্সের সঙ্গে মিল লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত এই জাতীয় সংক্রমণ ভালো হতে দুই থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগে। এর ব্যাপকতা বেশি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আরো যে যে পোষ্ট আপনার পছন্দ হতে পারেঃ
এমপক্সের ভয়াবহতা
প্রাথমিক অবস্থায় এম বক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪% হিসাবে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয় বলে আমরা জানতে পারি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আফ্রিকা মহাদেশে মোট ১৩টি দেশে মাংকিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এটি একটি নতুন রূপ লাভ করে বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান জানিয়েছেন।
প্লেড ২ তে ১০০ জনে মৃত্যু হয়েছিল ৪% বর্তমানে প্লেন ১ মৃত্যুর সংখ্যা ১০% হিসাবে নিরূপণ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিগত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ভাইরাসটির পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বিজ্ঞানীগণ অনুমান করেছেন যে বিশ্বব্যাপী জরুরী পদক্ষেপ না নিলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এমপক্স থেকে কিভাবে নিরাপদে থাকবেন
আমরা আগেই জেনেছি এটি একটি সংক্রমণ রোগ যা মানুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ও শরীরের স্পর্শে চুম্বনে এবং যৌনতার সংস্পর্শে এ রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। আবার মানুষের সংস্পর্শে তাঁর হাচি কাশির মাধ্যমে অসংখ্য ড্রপলেট নির্গত হয়ে থাকে। মানুষ স্বভাবগত কারনে পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। স্বভাবগত সামাজিক পরিবর্তন এর মাধ্যমে আপনি নিজে ও নিজ পরিবারকে রক্ষা করতে পারবেন।
কারণ এম পক্স আক্রান্ত রুগীর কাপড় অন্য কোন সুস্থ ব্যক্তি পরিধান করলে ঐ সুস্থ ব্যক্তিটিও এম পক্সে আক্রান্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এইজন্য কাপড় ব্যবহারের দিক থেকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। এই সংক্রমণ ঠেকাতে সূচের মতো বস্তুও ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মত প্রকাশ করেছেন।এমপক্স প্রতিরোধের জন্য সমন্বিত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপন করা আবশ্যক।
এমপক্স নিয়ে আমাদের শেষ কথা
ভ্যাকসিন প্রয়োগ এর মাধ্যমে এমপক্স থেকে সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে। আমাদের সমাজে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ পরিহার করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অবৈধ যৌন আচরণ থেকে নিজেকে হেফাজতে রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবন যাপন করতে হবে। সামাজিকভাবে আচরণগত পরিবর্তন আনতে হবে।
মুখোমুখি কথোপকথনের অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যের ব্যবহৃত জামা কাপড় অথবা লুঙ্গি বা চাদর ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। কফ বা থুতু যেখানে সেখানে না ফেলে তা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে মাটিতে পুতে ফেলতে হবে নতুবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করে এমপক্স সহ সকল সংক্রমণ রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
শুনেই ভয় লাগছে 🥲