ইপিল ইপিল গাছের গুন ও উপকারিতা

ইপিল ইপিল গাছের গুন সম্পর্কে জানতে চান? ইপিল ইপিল গাছের নাম শুনলেও আমরা অনেকে এর ব্যাবহার সম্পর্কে অবগত নই। তাই আজ আপনাদের জানাবো ইপিল ইপিল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে।

ইপিল-ইপিল-গাছের-গুন-ও-উপকারিতাগাছ আমাদের উপকারী বন্ধু সেটি ছোট থেকেই আমরা জেনে এসেছি। কিন্তু কোন গাছে কি কি উপকার লুকিয়ে আছে তা আমাদের মাঝে এখনো অজানা। তাই আপনাদের কাছে অন্যতম উপকারী গাছের গুন ও উপকারিতা আজ আমরা জানাতে চাই,

পেজ সূচিপত্রঃ ইপিল ইপিল গাছের গুন ও উপকারিতা

ইপিল ইপিল গাছ কোনটি ও কোথায় পাওয়া যায়

ইপিল ইপিল গাছ সাধারণত পৃথিবীর সব মহাদেশে দেখতে পাওয়া যায়। এই জাতীয় গাছের দ্বারা প্রাণীর জগৎ প্রটিন দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকে। যেখানে সেখানে এ গাছগুলি জন্মে থাকে। মানুষ পশুপাখি কীটপতঙ্গ মাছ ও মৎস্য জাতীয় প্রাণী হাঁস মুরগি জাতীয় প্রাণী এ গাছের দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকে। আমরা যতদূর জানি এ গাছের আদি জন্মস্থান মধ্য আমেরিকার সহ মেক্সিকান উপকূলবর্তী এলাকার বেশি পরিচিতি ।
ইপিল ইপিল গাছ একপ্রকার মসৃণ ডালপালা ও নরম জাতীয় কাঠের গাছ বটে। এর উপকারিতা এতো ভালো যে কোথাও কোথাও এই গাছকে মিরাক্কেল জাতীয় বলা হয়ে থাকে। গাছটি গ্রীষ্মের শুরুতে তার ডালে ডালে সবুজ পাতাতে ভরে উঠে। পাতাটা অনেকটা লজ্জাবতী গাছের পাতার মতো দেখা যায় । এই ইপিল ইপিল গাছ দ্রুত বর্ধনশীল গাছ হিসেবে বিবেচিত ।এই জাতীয় গাছের ফল কোন কোন দেশে মানুষ ডালের মতো করে ভেজে খেতে দেখা যায়। এর ফলে নাকি যথেষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে।

গবাদি পশু পালনে ইপিল ইপিল গাছের ব্যাবহার করার উপায়

ইপিল ইপিল গাছের পাতা গবাদি পশুর অন্যতম  প্রিয় খাবার হিসেবে সমাধিক পরিচিত। এই পাতাগুলি অতি সবুজ যা কাঁচা ঘাসের বিকল্প হিসেবে গরু মহিষের নিকট অতিপ্রিয় খাবার। এটি অতিমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে এটিকে আলফা আলফা গাছের সঙ্গে তুলনা করা চলে।

কারণ হিসাবে এই গাছের পাতার কান্ড ও নরম নরম ডগার ২৪% এর বেশি প্রোটিন থাকে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। তাছাড়া অন্যান্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ঘাসের তুলনায় এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি হয়ে থাকে। গবাদি পশু পালনে অনেকে এই জাতীয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ গাছের আবাদও করেছে। মাঠ থেকে এপ্রিল মাসে জমি প্রস্তুত করে এর বীজ বপন করা হয়ে থাকে।

ইপিল-ইপিল-গাছের-গুন-ও-উপকারিতাএ বীজ মাটি তৈরি করে পুঁতে দিতে হয়। যে কোন পরিবেশে এবং প্রাকৃতিকভাবে গাছগুলি জন্মে থাকে। বীজ বপণের সময় মাটি ভেজা থাকলে তাতে গোবর রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। অসমতল ও পরিত্যক্ত জমি যাহা চাষাবাদে ব্যবহৃত হয় না সেই জাতীয় জমিতে ও এই ইপিল ইপিল গাছের চাষ করা হয়ে থাকে।

এই  ইপিল ইপিল জাতীয় গাছের পাতা  প্রতি বছরে ৬ থেকে  ৭ বার কেটে গবাদিপশুকে খাওয়ানো হয়ে থাকে। যা কাঁচা ঘাসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এভাবে চাষ করলে প্রতি একক জমিতে প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ টন পশু খাদ্য হিসেবে উৎপাদন করা যায়। পশু খাদ্য হিসেবে এই গাছের পাতা প্রোটিন গুণ সমৃদ্ধ । 

আপনার আরো যে যে পোষ্ট পছন্দ হতে পারেঃ

ইপিল ইপিল গাছের পাতা ছাগল বা ভেড়া জাতীয় পশুর খাবার হিসেবে ব্যাবহার    

ইপিল ইপিল জাতীয় গাছের পাতা ছাগল ও ভেড়া জাতীয় প্রাণীদের প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম। এই পাতাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার সমৃদ্ধ হয়েে থাকে। শীতকালে যখন ছাগল বা ভেড়া জাতীয় পশুর খাবারের সংকট দেখা দেয় তখন ছাগল বা ভেড়া জাতীয় পশুদের উপদেয় খাবার হিসেবে এই ইপিল ইপিল গাছের পাতা উপেদেয় খাবার হিসেবে সমৃদ্ধ ।

শীতকালে যখন ছাগল বা ভেড়া জাতীয় পশুর খাবারের সংকট দেখা দেয় তখন ছাগল বা ভেড়া জাতীয় পশুদের খাবার হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত। শীতকালে খামারিদের জন্য পশু খাদ্য সংকট দেখা দিয়ে থাকে তখন খামারি দেয় এই জাতীয় খাবার দিয়ে তাদের প্রাকৃতিক ঘাসের উপর নির্ভরতা কমায়। ইপিল ইপিল  জাতীয় পাতা চাষ করে তাদের ঘাসের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে থাকে। 

ইপিল ইপিল গাছের পাতা পোল্টি ও হাঁস জাতীয় প্রাণীর প্রিয় খাবার 

পোল্ট্রি বা হাঁস খামারী হিসেবে যারা ব্যবসা করে আসছেন তাদেরও এই ইপি-লিপিল জাতীয় পাতা তাদের খামারে হাঁস মুরগির প্রোটিন জাতীয় খাবার হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা এই সমস্ত গাছ গুলির পাতা সংগ্রহ করে তারা হাঁস এবং মুরগিকে উপদেয় খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।

এতে আমাদের প্রাকৃতিক খাদ্যের চাহিদা প্রোটিন জাতীয় খাদ্য সমৃদ্ধতা লাভ করছে। আমরা দেখে থাকি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এ সমস্ত ইপিল  ইপিল গাছের পাতা খামারিরা নিজস্ব জমিতে এই সমস্ত পশু পাখিদের খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য প্রোটিন পূরণের জন্য এই জাতীয় ঘাসের আবাদ করে আসতেছে। যার পরিনাই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ঘাস দ্বারা এই সমস্ত   হাঁস মুরগির প্রাকৃতিক সম্পদের ভরপুর হচ্ছে। 

মাছের খাবার হিসেবে ইপিল ইপিল গাছ ব্যাবহার করার উপায়

মৎস্য চাষীদের জন্য ইপিল  ইপিল গাছের পাতার গুরুত্ব অপরিসীম ।তারা বিভিন্ন হাওর বাওর বা পুকুর জলাশয় যে সমস্ত মৎস্য চাষ করে থাকেন এই সমস্ত মৎস্য চাষীরা ইপিল ইপিল গাছের পাতা সংগ্রহ করে মাছকে উপদেয় খাদ্য হিসেবে প্রদান করে থাকে। এতে মাছের প্রোটিন সমৃদ্ধতা লাভ করে এবৎ  দ্রুত সময়ের মধ্যে মাছের উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।

এবং মাছ স্বাভাবিক গ্রোথ জন্মে থাকে। এজন্য মৎস্যজীবীরা ইপিল ইপিল গাছের পাতা সংগ্রহ করে তাদের লীজকৃত পুকুর হাওর বাওর নদী-জলাশয় বিভিন্ন স্থানে মাছের উপদেয় খাদ্য হিসেবে এই ইপিল  ইপিল গাছের পাতাকে ব্যবহার করে থাকেন এতে মাছের প্রোটিন সমৃদ্ধিতা লাভ করে।  পুষ্টিগুণের দিক থেকে প্রোটিন ফাইবার সহ বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। এটিতে পশুর মিনারেল ঘাটতি পূরণ করে পশুকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলে।

ইপিল  ইপিল গাছের বীজ কিভাবে সংরক্ষণ করবেন 

ইপিল  ইপিল  গাছের বীজ সংগ্রহের সময় তখনই হয় যখন এই বীজের উপরে খোলস পড়ে এবং এই খোলসের উপরে তার রং যখন বাদামী রং ধারণ করে তখনই বীজের সংগ্রহের উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচিত। সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই বীর সংরক্ষণ করতে হয়। বীজগুলি সিম জাতীয় বীজের মতো হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এ  বীজ সংরক্ষণ করতে হয়।

বিজ সংগ্রহের সময় খুব সাবধনতা অবলম্বন করতে হয়। বীজ বপনের সময় ৮০°  মাত্রায় ৩ মিনিট  গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয় পরে গরম পানি  ফেলে দিয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে  এ বীজ বপন করতে হয়।

আপনার আরো যে যে পোষ্ট পছন্দ হতে পারেঃ

ইপিল ইপিল গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যাবহার করার উপায়

ইপিল  ইপিল গাছ সাধারণত ৮ থেক ১০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই জাতীয় গাছ অনেকটা আড়ল জাতীয় গাছের মতোই  দেখায়। এর পাতা দীর্ঘ সময় ধরে  পশুপাখি খাবার হিসেবে  ব্যবহৃত হয়ে থাকে তেমনি এর ডালপালা জ্বালনি হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।  এই পাতার ব্যবহার যেমন সুনির্দিষ্ট ভাবে  ব্যবহর করা হয়ে থাকে। এ জাতীয় গাছ যেখানে সেখানে জন্মে।

ইপিল-ইপিল-গাছের-গুন-ও-উপকারিতাসাধারণত প্রাকৃতিকভাবে যেখানে এর উপযোগিতা সেখানেই এই গাছগুলো বড় হয়ে থাকে। সাধারণত নদীর পাড়ে পুকুর পাড়ে এই জাতীয় গাছগুলো আপনা আপনি তৈরি হয়ে থাকে। এখান থেকে পাতা পড়ে পশুপাখি মাছ এবং মৎস জাতীয় প্রাণীদের জন্য খুবই উপযোগী হিসেবে এই গাছগুলি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অনেক সময় এই গাছগুলো আড়ল গাছের মতো হওয়ার কারণ এর জন্য এর ডালপালা সাধারণত জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা আমাদের জ্বালানি সাশ্রয়ে সুবিধা অর্জন করতে পারি ।

ইপিল  ইপিল গাছ নিয়ে আমাদের শেষ কথা

আমরা যেখানে সেখানে এই  ইপিল  ইপিল গাছ জন্মানো দেখতে পাই ।অনেক সময় পুকুরের পাড়ে নদীর ধারে অথবা কোন ডোবার ধারে এই গাছগুলি প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে উঠে। যেখানে প্রাকৃতিকভাবে মৎস্য বা মৎস্য জাতীয় প্রাণীর  খাবর হিসাবে আমরা দেখতে পাই। আবার অনেক সময় বিভিন্ন জায়গাতে ভেড়া ছাগল গরু সবাই এই গাছগুলো খেয়ে থাকে।

আমরা যদি যথাযথ প্রাকৃতিকভাবে চাষ করতে পারি তাহলে পশু পাখির প্রোটিন জাতীয় খাবারের সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠবে। সেখান থেকে আমরা মাংস এবং দুগ্ধ  জাতীয় জিনিস এবং মৎস্য এবং মৎস্য জাতীয় প্রাণী গুলো আমরা সংরক্ষণ করতে পারব। সেখান থেকে  দেশ প্রোটিন সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে যাহা  মানব কল্যানে অবদান রাখবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url