পেটের ডান দিকে ব্যথা হওয়ার ৬ টি লক্ষণ
আমাদের অনেকেরই পেটের ডান দিকে ব্যথা হয়ে থাকে। আমাদের সমাজে অনেক ভোজন রসিক ব্যক্তি আছেন যারা অন্তত খাদ্যের ব্যাপারে কোন আপোষ করেন না। তারা ভেবে থাকেন পেট শান্তি তো দুনিয়ার শান্তি। এই জাতীয় খাদ্যাভাসের কারণে অনেককে অনেক সময় কষ্ট পেয়ে থাকেন।
পেজ সূচিপত্র
- এপেন্ডিসাইডের ব্যথা
- মাংসপেশিতে টান লেগে ব্যথা
- নারীদের ওভারিতে সিস্ট এর ব্যথা
- জ্বরায়ুর বাইরে ভ্রূণ্যের ব্যথা
- কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ব্যথা
- পিত্তথলিতে পাথরের ব্যথা
- আমাদের শেষ কথা
এপেন্ডিসাইডের ব্যথা
এপেন্ডিসাইটের ব্যাথা যে কোন সময় যে কোন বয়সের মানুষের জন্য একটি ভয়ানক বিপদের কারণ হতে পারে সেটি হলো এপেন্ডিসাইটের ব্যাথা। সেই যে ব্যক্তি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ক্ষতি সাধিত হয়। আমি এমন অনেক মানুষের কথা বলবো যাদের এই এপেন্ডিসাইটের ব্যথায় অনেক কষ্ট পেতে দেখেছি। এপেন্ডিসাইটের ব্যথা পেনকিলার দিয়ে দমিয়ে রাখার কারনে অনেক সময় অ্যাপেন্ডিসাইড লাম্প হয়ে যায়।
আবার অনেকক্ষেত্রে এপেন্ডিসাইড ফেটে গিয়ে ইনফেকশন হয়ে রুগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে দেখেছি। যাদের এই ব্যথা সম্পর্কে কোন ধারণা নাই তারা দীর্ঘদিন যাবৎ কষ্ট পেয়ে আসছে। তলপেটে ভীষণ ব্যথা। ব্যথার কষ্টে মাজা কুকরি লেগে গিয়েছে। ভীষণ বমি হতে থাকছে। অপরদিকে শরীরের জ্বর এই জাতীয় লক্ষণগুলি দেখা দিলে ভেবে নিতে হবে তাদের এপেন্ডিসাইটের হয়েছে। এই জাতীয় রোগীদের জরুরি ভাবে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। ডাক্তার রোগীর অবস্থা দেখে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে নিশ্চিত হবেন এবং অপারেশন ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
মাংসপেশিত টান লেগে ব্যথা
কারো কারো আবার হঠাৎ করে যদি পায়ের পেশিতে টান লেগে থাকে এ কারনে ডান সাইডের তলপেটে প্রচুর ব্যথা অনুভূত হতে পারে। আমরা মেডিকেল সাইন্স দেখেছি আমাদের ডানদিকে তলপেটে কোন হাড় থাকে না। এখানে শুধুমাত্র মাংসপেশিতে সমৃদ্ধ থাকে। কোন কারণে শারীরিক ব্যায়াম বা খেলাধুলা করতে গিয়ে আঘাত পেয়ে থাকে তবে ডানদিকে মাংসপেশীতে আঘাত জনিত ব্যথা অনুভূত হয়। আমরা যদি এই ব্যথার উৎস খুঁজতে যাই তবে মাংস পেশিরর টান ছাড়া কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটু বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা নিরাময় করা সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ তিরিশের পর ঢেঁড়স পানি খাওয়ার ৫টি উপকারিতা
নারীদের ওভারিতে শিষ্টের ব্যথা
নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমাদর দেশে অনেক নারীদের ওভারিতে শিষ্ট হয়ে থাকে। তাদের তলপেটে ভীষণ ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। আবার আমরা দেখেছি নারীর ওভারতে সৃষ্টের কারণে আপনি নিজে ভিষন কষ্ট পাচ্ছেন।এই কষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনি একজন বিশিষ্ট গাইনোকোলজিস্ট এর কাছে যান।গাইনোকোলজিস্ট আপনাকে আলতাসনোগ্রাফির মাধ্যমে আপনার শিষ্টের অবস্থান দেখে আপনাকে চিকিৎসা প্রদান করবেন। এতে করে আপনি সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারবেন।
অপরদিকে যদি আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলার পর অবহেলা করতে থাকেন এক্ষেত্রে আপনার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অপারেশনও করা লাগতে পারে। তবে আমার উপদেশ হলো প্রাথমিক অবস্থায় আপনি একজন ভালো গাইনোকোলজিস্টের নিকট চিকিৎসা গ্রহণ করুন। এ না হলে পরবর্তীতে আপনার বিপদ আসতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় গেলে ওষুধের মাধ্যমে আপনি সুস্থ হতে পারবেন।
জরায়ুর বাইরে ভ্রুনের ব্যথা
অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের জরায়ুর বাইরে ভ্রুনের বিকাশ ঘটে থাকে। এই কারণে পেটের ডান দিকে নিচে ব্যথা হতে পারে। এটা কোন অস্বাভাবিক বিষয় না। এটার জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই বিষয়ই হচ্ছে আপনাকে একজন ভালো গাইনোকোলজিস্ট এর কাছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হতে পারে।গাইনোকোলজিস্ট আপনার যাবতীয় ইনভেষ্টিকেসন করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এই চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আপনি শারীরিক সুস্থতা ফিরে পেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন - নিম গাছের উপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ব্যথা
আমাদের দেশে খাদ্যভাষের কারনে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগে থাকেন। নিয়মিত পায়খানা পরিষ্কার না হলে এসিডিটি সহ অনেক সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এরই সঙ্গে তলপেটের ডান দিকে ভীষণ ব্যথা অনুভূত হয়। আপনি তালমাখনা ইসবগুলের ভুষি মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। অপরদিকে ঔষধ হিসেবে আপনি ডুরালাক্স খেতে পারেন। আবার পায়ুপথে গ্লিসারিরন সাপজিটর ব্যবহার করতে পারেন।
এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে আপনি সাময়িক সুস্থ হতে পারবেন। সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ হল এরূপ সমস্যা দেখা দিলে আপনি একজন ভালো ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন। ডাক্তার সমস্ত কিছু ইনভেষ্টিকেসন করে আপনাকে চিকিৎসা দিলে আপনি এ জাতীয় শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন।
পিত্তথলিতে পাথরের ব্যথা
পিত্তথলিতে পাথর হলে আপনার ডান পেটের নিচে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে থাকবে। অপরদিকে জ্বর ও বমি বমি ভাব অর্থাৎ প্রচন্ড বমি হতে থাকবে। এমন ব্যথা হবে যে আপনি এ ব্যাথার কারনে ভীষনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে আপনি ভালো একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনি আল্টাসনোগ্রফি করিয়ে নিশ্চিত হন যে আপনার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে কি না।
নিয়মিত শরীরের যত্ন নেই ।খুব বেশী চর্বিযুক্ত খাবার ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন সম্ভব হলে দ্রুত আপনার পিত্তথলি থেকে পাথর অবমুক্ত করুন। এমতাবস্তায় ভালো ভাবে দূত অপারেশন করিয়ে নিন ।নতুবা তবে যে কোন সময় ইনফেকশন ঘটিয়ে আপনার বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে ।বর্তমানে অনেক আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের দেশে চালু আছে যা দ্বারা আপনি শরীর না কেটে লাপ্সোসকপি আপারেশন করিয়ে সুস্থতা ফিরে পেতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা
মানুষ নিজে তার শরীর সুস্থ রাখার জন্য চেষ্টা করে থাকে। শারীরিক সুস্থতার জন্য সে নিয়মিত শরীরচর্চা করে থাকে। বদ অভ্যাস যেখন সিগারেট খাওয়া জর্দা দিয়ে পান খাওয়া ত্যাগ করতে হবে। অপরদিকে চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। গরু বা খাসির মাংস এর পরিমাণ কমিয়ে শাকসবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে।আমাদের অনেকেরই বেশী বেশী রাত জেগে থেকে কাজ করার অভ্যাস আছে। বেশি রাত পর্যন্ত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যেতে হবে। আবার খুব সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠতে হবে। শরীর ঠিক রাখার জন্য প্রতিদিন সকালে অন্তত আদাঘন্টা হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করতে হবে। এভাবে জীবন যাপন করলে দীর্ঘ দিন সুস্থ থাকা সম্ভব হবে।
পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url