নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন - নিম গাছের উপকারিতা
নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন ও নিম গাছের উপকারিতা সস্পর্কে জানতে চান? তবে এই
আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। আজ আমরা এই নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন সস্পর্কে
আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আমরা নিম গাছ চিনি তবে কি এটির ঔষধি গুন সস্পর্কে সেইভাবে জ্ঞান নেই। এর ঔষধি গুন সস্পর্কে জানতে পারলে আপনারা অনেক উপকৃত হবে। তবে চলুন দেরি না করে জেনে নেই নিম গাছের বহুবিধ ঔষধি গুন সস্পর্কে।
পেজ সূচিপত্র
- নিম পাতা ফাঙ্গস ও ব্যাকটেরিয়া রোধ করে
- নিম পাতা চুলকানি দূর করে
- নিয়মিত নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার করলে শরীর সুস্থ থাকে
- নিমের তেলে ভিটামিন ই থাকে ও চুলের পরিচর্যা বাড়ে
- নিমপাতা সিদ্ধ করে শরীরে ইরিটেশন এবং চুলকানির দূর করে
- নিম পাতা পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও রক্ত শুদ্ধ করে
- নিম পাতা সেদ্ধ করে পানিতে মিশিয়ে গোসল করা যায়
- সিদ্ধ করে বোতলে প্যাক করে ফ্রিজে রেখে দিন
- দাঁতের যত্নে দাঁত মাজার ডাল ব্যবহার করতে পারেন
- কাটা ছেঁড়া ও ফোলা স্থানে এ পাতার ব্যবহার করতে পারেন
- আমাদের শেষ কথা
নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করে
আমাদের অনেকের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়া লক্ষ্য করা যায়।
এই ব্যাকটেরিয়া গুলো বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক বা অ্যালাপ্রতি ওষুধের মাধ্যমে
নির্মূল করা সম্ভব হয়ে থাকে না। যার কারণেই দাউদ এবং ফাঙ্গাস শরীরের
বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আপনি যদি এই ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়া
থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে নিমের পাতা পাতায় বেঁটে গোসলের আগে অন্তত আধা ঘন্টা
শরিয়ে মাখিয়ে রাখুন।
এতে করে আপনার ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়া চিরতরে দূর হয়ে যাবে। প্রসঙ্গক্রমে
বলা যায় নীমের পাতার যে রস সে রস থেকে আপনার ব্যাকটেরিয়া গুলো মরে যাবে। এবং
আপনার শরীর পূর্বের ন্যায় সঠিক ভাবে সতেজ হয়ে গড়ে উঠবে।
নিম পাতা চুলকানি দূর করে
আমাদের দেশে চুলকানি বিখাউস একজিমা একটি সংক্রামক রোগ হিসেবে সমাধিক পরিচিত। চুলকানি
এবং বিখাউস গুলো শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেকে সংক্রমিত হয়ে সমস্ত শরীরে
ছড়িয়ে যেতে পারে। এটি একটি সংক্রমিত রোগ যা একজন ব্যক্তি থেকে অপর ব্যাক্তিতে
ছড়িয়ে থাকে। অ্যালাপতি শাস্ত্রীয় মতে এই চুলকানি রোগ দীর্ঘ
সময় লেগে যায়। পাশাপাশি যদি নিম গাছের পাতা পাটায় বেটে আপনি গোসলের পূর্বে অন্তত
আধাঘন্টা আপনার শরীরে মাখিয়ে রাখতে পারেন। তবে এই চুলকানি জাতীয় এবং বিখাউস
জাতীয় রোগ থেকে আপনি অচিরেই মুক্তি পেতে পারেন।
নিয়মিত নিম পাতা ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার করলে শরীর সুস্থ থাকে
আমাদের দেশে প্রায়ই প্রতি বাড়িতে জাত নিমের গাছ লক্ষ্য করা যায়। এই জাত
নিমের পাতা পিষে আপনি সংরক্ষণ করতে পারেন। গোসলের পূর্বে এই পাতার সঙ্গে কিছুটা
কাঁচা হলুদ মিশিয়ে সমস্ত শরীরের মেখে গোসলের আধাঘন্টা পূর্বে ব্যবহার করতে
পারেন।তাতে আপনার শরীর সুস্থ এবং সাবলীল হয়ে গড়ে উঠবে। তাতে কোন রকম চর্ম
জাতীয় রোগের আক্রমণ থেকে আপনি অন্তত রক্ষা পাবেন
নিমের তেলে ভিটামিন ই থাকে ও চুলের পরিচর্যা বাড়ে
নিম গাছের ফলের তেল থেকে ভিটামিন সমৃদ্ধ তেল নিঃসরণ হয় আমাদের অনেক মার্কেট
ব্যবস্থাপনায় এ নিমের তেলের যথেষ্ট কদর রহিয়াছে। যদি নিমের তেল আপনি আপনার
মাথাতে চুলের পরিচর্যার জন্য ব্যবহার করতে পারেন তবে আপনার মাথাতে বিভিন্ন ধরনের
ভাঙ্গাস বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া জাতীয় রোগ থেকে অচিরেই ধ্বংস হয়ে
যাবে আমাদের সমাজে। যা আপনার মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখবে এবং নিয়মিত এবং পরিমিতভাবে
আপনার চুলের পরিচর্যায় কাজ করে যাবে।
নিমপাতা সিদ্ধ করে শরীরে ইরিটেশন এবং চুলকানির দূর করে
আমাদের শরীরে সাধারণত গরমের দিনে বিভিন্ন বয়সের মানুষের ইরিটেশন তৈরি হয় এই
ইরিটেশন থেকে অনেকটা চুলকানির মতো রূপ নেই যা মানুষের অস্থিরতাকে বাড়িয়ে তোলে।
এই অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে আপনি গোসলের পূর্বে আপনার শরীরের ইরিটেশন
স্থানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিম পাতার রস ছেঁচে তাতে কাঁচা হলুদ মিশ্রিত করে
পর্যাপ্ত পরিমাণে লাগিয়ে রাখুন। গোসলের আধাঘন্টা পর্যন্ত লাগিয়ে রেখে পরবর্তীতে
গোসল করে আপনি আপনার শরীর ধুয়ে ফেলুন। তাতে আপনার শরীরের ইরিটেশন এবং চুলকানি সবই
দূর হয়ে যাবে। পর্যায়ক্রমে এভাবে এক সপ্তাহ পর্যন্ত আপনি ব্যবহার করেন দেখবেন
আপনার শরীর সতেজ এবং সাবলীল হয়ে গড়ে উঠেছে।
নিম পাতা পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও রক্ত শুদ্ধ করে
নিম পাতা পাটাতে বেটে অথবা কাঁচা অবস্থায় নিমপাতা চাবিয়ে খেতে পারেন এতে নিম
পাতার তিতা ভাব আপনার মুখে সারাদিন পর্যন্ত জেগে থাকতে পারে যদি এটা সম্ভব না হয়
তবে আপনি নিমের পাতা পাটাতে বেটে ছোট ছোট গুলি আকারে আপনি ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে
পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই তিনটি নিয়মের পাতার বড়ি খেলে আপনার
পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে শরীরের সুস্থতা আপনি ফিরিয়ে পেতে পারেন। আমারদের দেশে হারবাল চিকিৎসার একটি পথ প্রদর্শক
হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
নিম পাতা সেদ্ধ করে পানিতে মিশিয়ে গোসল করা যায়
নিমের পাতা শরীরের জন্য খুবই উপযোগী একটি হারবাল মহাঔষধ। বিশেষত আপনি যদি প্রতিদিন
ক্লান্ত শরীরে নিমের পাতা গরম করে পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন তবে আপনার যে
জাতীয় চর্মরোগ অথবা হাম অথবা বসন্ত অথবা ফাঙ্গার অথবা চুলকানি এ জাতীয় রোগ থেকে
আপনি সহজে নিষ্কৃতি পেতে পারেন। বাড়ির ছোট বড় সকালেই এই নিম পাতা সিদ্ধ করে
পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে সমস্ত পরিবারের মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত
হবে। পাশাপাশি আপনার বিভিন্ন জাতীয় মৌসুমী যে অসুখ-বিসুখ হয়ে থাকে। সে
অসুখ-বিসুখ থেকে আপনি নিষ্কৃতি পেতে পারেন। এ নিম পাতার সঙ্গে পানির মিশ্রণের ফলে
গোসলে আপনার শরীর সতেজ করে গড়ে তুলবে
সিদ্ধ করে বোতলে প্যাক করে ফ্রিজে রেখে দিন
পর্যাপ্ত পরিমাণে নিম পাতা নিন এবং তা পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে একটি ভালো পাত্রে সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে আধাঘন্টা ফুটিয়ে নিন। ফুটানো পানি একটি ভালো পরিষ্কার পাত্রে মুখ টাইপ
করে ফ্রিজে রেখে দিন। যখন আপনি মুখে কোন প্যাক লাগাতে যাবেন তখন নিমের পাতা সিদ্ধ
করা পানি দিয়ে আপনার মুখটাকে সুন্দর করে ধুয়ে নিন এবং তাতে প্যাক লাগান দেখবেন
আপনার মুখে কোন রকম জাতীয় কোন জিনিস কখনো পড়বে না এটা থেকে আপনি আপনার মুখকে
সুরক্ষা করতে পারবেন।
অপরদিকে আমাদের দেশে সূর্যের যে রশি সে রশ্মি থেকে আপনার মুখে রক্ষা করার জন্য
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে আপনার মুখটাকে পরিষ্কার করে নিন দেখবেন সূর্যের তাপে
আপনার মুখের চামড়া কোনটাই নষ্ট হবে না যা অবস্থান সেই অবস্থান থেকে সুন্দরভাবে
বেঁচে থাকবে।
দাঁতের যত্নে দাঁত মাজার ডাল ব্যবহার করতে পারেন
আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চল সহ শহরের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ নিবেন গাছের ডাল ভেঙে
দাতুন হিসেবে ব্যবহৃত করে থাকে এখানে পাইরিয়া বা দাঁতের কোন রোগ থাকলে নিম গাছের
ডাল আপনার দাঁতের জন্য খুবই উপযোগী ব্রাশ হিসাবে চিহ্নিত করে থাকে এছাড়া আপনি
যখন ব্রাশ করবেন সে ব্রাশির কিছু অংশ তিতা আপনার পেটে চলে যায় চলে যাওয়ার জন্য
আপনার যত রকমের কৃমি আছে সে কৃমি গুলো আপনার ধ্বংস হয়ে যাবে।
এজন্য নিম গাছের ডাল দাঁতন হিসেবে ব্যবহার করলে একদিকে যেমন দাঁতের উপকার হবে
অপরদিকে আপনার শরীরের ও আমল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে গাছের ডাল আপনার দাঁতন
হিসেবে খুবই উপযোগী যা আপনার শরীরকে সতেজ এবং সুঠাম করে গড়ে তুলবে। সাধারণত
আমাদের দেশের গ্রাম এলাকায় মানুষ এই নিমের দাঁতন দিয়ে সকালে এবং রাত্রিতে এবং
রমজান মাসে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কাটাছেঁড়া ও ফোলা স্থানে এ পাতার ব্যবহার করতে পারেন
সাধারণত আমাদের শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে অথবা ফুলে গেলে অথবা বিভিন্ন ধরনের হাম
অথবা বসন্ত হলে এ পাতার ব্যবহার সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়। বিশেষত ছোট ছোট বাচ্চারা
যাদের শরীরে মাসি পিসি ইত্যাদি জাতীয় রোগ দেখা দেয় তখন সাধারণত আমাদের
দেশের মা দাদীরা এই পাতাকে পিষে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে রেখে তার শরীরকে
সুস্থ এবং সাবলীল করে গড়ে তোলে। ছোট ছোট বাচ্চারা যখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়
তখন এই নিয়মে পাতার ব্যবহার গ্রাম অঞ্চলের সর্বাধিকভাবে প্রতিলিত হয়ে থাকে। এ
পাতার ঔষধি গুন বলে শেষ করার উপায় নাই।
আমাদের শেষ কথা
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আমাদের দেশে নিম পাতার ব্যবহার সমাধিকভাবে প্রচলিত। বিভিন্ন সময়ে আমরা এই নিম পাতার ব্যবহার বিভিন্ন কর্মকান্ডে দেখে আসি। এই নিম
পাতা এত ঔষধি গুন সমৃদ্ধ পাতা যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন মানুষের
ক্ষেত্রে এই নিম পাতার ব্যবহার সর্বাধিক ভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। প্রকাশ থাকে যে
এই পাতা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের উপকারে লেগে থাকে। এই সমস্ত পাতাগুলোকে
বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আবার পরিবেশগত দিক থেকে বিবেচনা করলে এই পাতার
শীতল বাতাস মানুষ অসুস্থ হলে এ পাতার ব্যবহার সর্বাধিক। আবার সুস্থ থাকাকালীন সময়েও আমরা নিম পাতার ব্যবহার করে থাকি। এজন্য আমরা
বলে থাকি বেশি করে নিম গাছ লাগান পরিবেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলুন।
আরো পড়ুনঃ বাসক গাছের ঔষধি গুণ সম্পর্কে জেনে নিন
পেন এন্ড পেপার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url